Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

জোয়াড়ী ইউনিয়নের প্রাচীন ইতিহাস

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

ইতিহাসের দূর্লভ আর্কাইভ হতে পাওয়া

১ নং জোয়াড়ী ইউনিয়নের ইতিহাস

 

১ম বিশ্বযুদ্ধের প্রায় দুইদশক পূর্বে অর্থাৎ ঊনিশ শতাব্দীর প্রায় দশ বছর আগে তৎকালীন বৃটিশ শাসনামলের সময় রাজশাহী সাব ডিভিশনের অমর্ত্মগত নাটোর নামক মহাকুমার বড়াইগ্রাম নামের উপআঞ্চলিক এলাকায় নাটোরে ‘‘দিঘাপতিয়া রাজার’’ আপন সহদর রাজা দয়ারাম রায় এবং জয়রাম রায় যথা ক্রমে দয়ারামপুরে দয়রাম রায় এবং বড়াইগ্রামের পাশে ‘‘জয়রাম রায়’’ ঔপনিবেশিক শাসন এবং সার্ম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ‘‘রাজা জয়রাম রায় এর একমাত্র কন্যার নাম শ্রীমতি জয়ারানী রায় ছিলো বলে অত্র এলাকায় নাম পরবর্তীতে জোয়াড়ী নামে অবহীত করা হয়।

 

যাহা বর্তমানে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া হতে প্রায় ২কি:মি: উত্তর পশ্চিমাংশে ঢাকা - রাজশাহী মহাসড়কের প্রায় ২০০ গজ পশ্চিম পাশে ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন অবস্থিত। তৎকালীন বৃটিশাসনামলে বর্তমানে অত্র ইউনিয়নের ভবানীপুর নামক গ্রামের মরহুম জনাব সিদ্দিক আলী মিয়াকে ১৯৩০ সালের ১লা ডিসেম্বর ‘‘গর্ভনীং ইউনিয়ন বোর্ড প্রেসিডেন্ট’’ পদে বৃটিশ এস,ডিও প্রশাসন পরোক্ষভাবে নির্বাচিত করেন। জনাব সিদ্দিক আলী মিয়া কেচুয়াকোড়া গ্রামের উত্তর পূর্ব সীমামেত্ম অর্থ্যাৎ ঢাকা - রাজশাহী মহাসড়কের সাথে ‘‘কারবালা’’ মৌজায় একটি শালিসী বৈঠক খানা তৈরি করেন।

জনাব সিদ্দিক আলী মিয়া মাত্র ৩ বছর বোর্ড প্রেসিডেন্ট থাকার পর তৎকালীন বিশিষ্ট সমাজ সেবক এবং দূরদর্শী রাজনীতিবীদ কুমরুল নিবাসী মরহুম সখাতুল্লা সরকার ১৯৩৪ সালের ১লা জানুয়ারী বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে অধীষ্ঠিত হন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ায় এবং পাক-ভারত বিভক্তি হওয়ার সুবাদে প্রায় ২ যুগ একটানা ক্ষমতার পদে বহাল থাকেন।

মরহুম জনাব সখাতুল্লা সরকার ক্ষমতায় থাকা কালীন কেচুয়াকোড়া গ্রামের তৎকালীন প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ জনাব আজিমুদ্দিন সরকারকে মরহুম জনাব সখাতুল্লা সরকার স্বেচ্ছায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ০১-০১-১৯৫৭ সালে ক্ষমতায় বসিয়ে দেন।

মাত্র প্রায় ২ বছর ৬ মাস জনাব আজিমুদ্দিন ক্ষমতায় থাকার পর পাকিসত্মানী শাসনের নিয়মে কুমরুল গ্রামের বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ এবং তৎকালীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনাব মোঃ নইমুদ্দিনকে ১৯৫৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইয়া জনাব নঈমুদ্দিন সাহেব কারবালা হইতে তাঁহার নিজের গ্রাম কুমরুল ও কালিকাপুর মৌজায় নিজস্ব সম্পত্তিতে যাহা  বর্তমান S/Aরেকর্ড নং ২৮৪,৮৩,৮২ তিনটা যাহা R/Sখং নং-১ মোট ১.২৮ শতাংশ সম্পত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েত কাউন্সিল বোর্ড গঠন করেন যাহা বর্তমানে অত্যাধুনিক ও নির্মল পরিবেশ মন্ডিত ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নামে পরিচিত। তাঁহার দূরদর্শী নেতৃত্বের স্বিকৃতী স্বরূপ ১৯৬৪ সালের ১লা ডিসেম্বর ৩জন গ্রাম পঞ্চায়েত মেম্বরদের মৌলিক সমর্থনে তিনি মধ্যবর্তী সময়ে পূনরায় নির্বাচিত হন। ১৯৬৪-৬৫ হতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতার আসার পর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যমত্ম জনাব মরহম নইমুদ্দিন ক্ষমতায় থাকেন।

স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের পর ১৯৭১সালের ১৭ই ডিসেম্বর হতে ১৯৭২ সালের ৩১শে  ডিসেম্বর পর্যমত্ম কুমরুল নিবাসী জনাব মোঃ আফতাব উদ্দিন আহমেদ রিলীফ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। তৎপরবর্তী বাংলাদেশের জাতির জনক এবং স্থপতি মরহুম শেখ মুজিবর রহমান এর সময় ‘‘বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ আইন ১৯৭৩’’ অধ্যাদেশ প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯৭৩ সালের ......তারিখে কামারদহ গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও তৎকালীন রাজনৈতিক নক্ষত্র মরহম জনাব মোঃ এশারত আলী সাহেব ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়নের স্বাধীনতা পরবর্তী ১ম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে আর্বিভূর্ত হন। তখন নির্বাচনের মেয়াদকাল ছিল ৪ বৎসর জনাব এশারত আলী প্রাং এর মেয়াদ শেষে ১৯৭৭সালে স্বাভাবিক নির্বাচনে মরহুম জনাব মোঃ নঈমুদ্দিন সাহেব পূনরায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়ন বাসীকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

১৯৭৭ সালে জনাব নঈমুদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার পর মেজর জিয়াউর রহমানের আমলে নির্বাচন ব্যবস্থা পিছিয়ে যাওয়ার সুবাদে একটানা প্রায় ৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি মারা যান। তাঁহার মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালের ১০/১০/১৯৮২ তৎকালীন সিনিয়র মেম্বার জনাব মোঃ আলী আকবরকে উপজেলা প্রশাসন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করেন

 

১৯৮৮ সালে জেনারেল এরশাদের শাসনামলে ইউনিয়ন পরিষিদ নির্বাচনে মরহুম জনাব এশারত আলী প্রাং পূনারায় দ্বিতীবারের মতো নির্বাচিত হয়ে ভূতপূর্ব  ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খেতাবীতে ভূষিত হন। তাঁহার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ১৯৯০ সালে তিনি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদ হতে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন।

 

জনাব এশারত আলী পদত্যাগের কারনে ১৯৯০ তারিখে তৎকালীন অভিজ্ঞ মেম্বার রামাগাড়ী গ্রামের মরহুম জনার মোঃ হজুর আলী প্রাং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের কিছু দিন পরই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপ-নির্বাচনে ১৯৯০ সালে আলহাজ খোদাবক্স প্রাং এর সুযোগ্য সমত্মান জনাব চাঁদ মাহমদ পূর্নাঙ্গ চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। মাত্র ২ বছরের মেয়াদ শেষে বেগম খালেদা জিয়ার ১ম ক্ষমতায় ১ম বছরে ১৯৯২ সালের মার্চের নির্বাচনে জনাব আবু হেনা মোসত্মফা কামাল বিপুল জনসর্মথনে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসেবে ক্ষমতায় আসেন । পরবর্তীতে বনপাড়া পেŠরসভার জোয়াড়ী ইউনিয়নের সীমানা সংক্রামত্ম জটিলতা উচ্চ আদালতে মামলার কারনে পরবর্তী ১৯৯৭ এবং ২০০৩ এর নির্বাচন স্থগিত হওয়ার সুবাদে একটানা ক্ষমতায় থাকেন।

 

জনাব চাঁদ মাহমুদের মেয়াদ কালীন সময়ে ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে দাতা সংস্থা ইউ, এস, এ আইডি এবং এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে হল রুমসহ ১৬ কক্ষ বিশিষ্ট অত্যাধুনিক দ্বিতলভবব যাহা ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন হিসেবে নির্মীত হয়। অবশেষ ২০১১ সালের জুন মাসের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বড়াইগ্রাম উপজেলার অত্র ইউনিয়নের রেকর্ড সংখ্যক প্রতিদ্বন্দীকে  পরাজিত করে পূনারায় জনাব চাঁদ মাহমুদ ১নং জোয়াড়ী ইউনিয়ন বাসীর চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ  গ্রহণ করেন।